Sunday, October 31, 2021

সাময়িক মুক্তি জীবনী শক্তি




ভ্রমণ মানেই হলো মুক্তি, আনন্দ। কিন্তু মানুষ ঘুরতে যায় কেন? কিসের লোভে? কিছু পাওয়ার জন্য না কি নিজেকে হারাবার জন্য। রোজকার দৈনন্দিন জীবন যুদ্ধে মানুষ যখন ক্রমশঃ হাঁপিয়ে ওঠে তখন শক্তি সঞ্চয়ের জন্য মুক্তির খোঁজে বেরোয়। আর সেই মুক্তি পেতে বিভিন্ন জানা অজানা পথে চেনা অচেনা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সে পাড়ি দেয়

প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে কোথাও আমরা নিজেকে হারিয়ে ফেলি। আমরা নিঃশ্বাস প্রশ্বাস তো নিই কিন্তু কুম্ভক করি না অর্থাৎ সেটা অনুভব করি না। নিজেদের ভেতরের প্রতিভা বা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর পরিস্ফুটনের দরজাগুলো বন্ধ করে দিই। আমরা তখন আমাদের চারপাশের জগতের চাওয়া পাওয়ার বিশ্লেষণে অনেক বেশি মনোযোগ দিই। নিজেদের অস্তিত্বের কথা একেবারে ভুলে যাই। একটা অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকি। তাই যখনই এই প্রতিযোগিতার খেলায় হাঁপিয়ে যাই আমরা মুক্তির পথ খুঁজি; আর সেই মুক্তিই হলো ভ্রমণ।

জীবন মানেই হলো একটা ভারসাম্য, এই ভারসাম্যর তারতম্য হলেই আমাদের মধ্যে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। প্রতিযোগিতার খেলায় এই ভারসাম্য কখনও কখনও নষ্ট হয়ে যায় যাকে ঠিক করার জন্য আমরা নিজেদের হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্বকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ি। যে সময়গুলো নিজেদের নিঃশেষ করে প্রতিযোগিতায় লাগাতাম, সেই সময়গুলোই ভ্রমণে প্রকৃতির সাথে গল্প করে বন্ধুত্ব করে কাটাই যে আমাদের নিজেদের হারিয়ে যাওয়া প্রতিভাগুলোকে খুঁজে এনে দেয়। প্রকৃতি আমাদের নিজেকে চিনতে শেখায়, নিজেদের সাথে পরিচয় করায় এবং প্রকৃতির মধ্যে যে প্রাকৃতিক সম্পদ আছে তাদের সঙ্গেও আমাদের পরিচয় করায়।। দৈনন্দিন জীবনের কোলাহলে যা আমরা শুনতে পাই না, দেখতে পাই না প্রকৃতির নিঃশব্দতা আমাদের সেই অশ্রুতকে শোনায়, অদেখাকে দেখায়।

ভ্রমণ মানেই হলো সম্পূর্ণ আনন্দ কারণ ভ্রমণ আমাদের প্রতিযোগিতা নয় সহযোগিতা শেখায়; অন্যের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয় আনন্দ ভাগ্ করে নেওয়া শেখায়। সে আমাদের পরম সহচরী। ভ্রমণে আমরা নিজেকে প্রমাণ করি না; বরং নিজেকে উজাড় করে তার আনন্দ উপভোগ করি। তখনই আমরা গেয়ে উঠি :

 "আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে,

আমার মুক্তি ধুলায় ধুলায় ঘাসে ঘাসে।।...."


ঋতুপর্ণা বসাক

Monday, October 11, 2021

ক্ষণ-মূল্যায়ন !!!

 Moment-Evaluation!!!


বর্তমান-ক্ষণ এক অদ্ভুত অবস্থা। কেউ বর্তমানের মূল্য বোঝে না। যখন চলে যায় তখন সবাই আফসোস করে। বর্তমান যখন থাকে সবাই তখন অতীত আর ভবিষ্যৎ কে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আজ যা বর্তমান গতকাল সেটা ভবিষ্যৎ ছিল, আগামীকাল সেটাই অতীত। সে যখন অতীত আর ভবিষ্যৎ ছিল তখন সবার একে ছাড়া আর কোনো চিন্তা ছিল না, কিন্তু যেই সে বর্তমান হলো সব প্রাধান্য শেষ হয়ে গেলো। কথায় বলে "পাওয়ার আগে এবং হারানোর পরে সব কিছুই মূল্যবান। "

কেউ আমরা বর্তমানে বাঁচি না। তাকে নিয়ে চিন্তা করার সময়ই নেই আমাদের কারোর কাছে। আমরা অতীত আর ভবিষ্যতের মাঝখানে শাটল ককের ভূমিকা পালনে ব্যস্ত। বর্তমান কে অনুভব করার মতো মনই নেই আমাদের। তার অস্তিত্ব আমরা কাজে লাগাই অতীতের মূল্যায়ন আর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে।

সারাজীবন শুধু দৌড়ে যাই - কিসের জন্য? কি খুঁজতে? কি পেতে? - কিছুই জানি না। জানবো কেমন করে? কোনো কিছুতেই তো আমরা তৃপ্ত নই। এখন যেটা আনন্দ দিলো কিছুক্ষণ পরেই সেটা মূল্যহীন হয়ে গেলো। যদি আরও চাই করে দৌড়োতে থাকি তবে শীঘ্রই হাঁপিয়ে বসে পড়বো। নিজের ইচ্ছেতে লাগাম না টানলে বলগাহীন ঘোড়ার মতো উদ্দেশ্যহীন ভাবে শুধু দৌড়ে যাবো। তাই নিজের জীবনের মুখোমুখি হয়ে তাকে প্রশ্ন করতে হবে যে সে কি চায়, নিজের জীবনের মানে খুঁজতে হবে। তবেই জীবনের উদ্দেশ্য সফল হবে।

প্রতিটি মুহুর্ত কে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে অনুভব করতে হবে। এটা বুঝতে হবে যে এখন যা আছে আমরা অসংখ্য বার চেষ্টা করলেও এই একইরকম মুহূর্ত কোনো ভাবেই পাবো না বা তৈরী করতে পারবো না - এটাই ধ্রুব সত্য । তাই বর্তমানকে উপভোগ করতে হলে তার সাথে আমাদের বন্ধুত্ব করতে হবে, তাকে সময় দিতে হবে, তাকে ভালোবাসতে হবে।


মহা ষষ্ঠী 

ঋতুপর্ণা বসাক

১১.১০.২০২১

শ্রোতা ও বক্তা

  শ্রোতা ও বক্তা শব্দ দুটো নিজেরাই নামের মধ্যে নিজেদের চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করে দেয়। একজন বলে একজন শোনে। যে বলে সে বক্তা, আর যে শোনে সে ...

Popular Posts