Thursday, May 22, 2025

শূন্য নাকি পূর্ণ

 

সবাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের খুব অপরিহার্য মনে করে। তারা ভাবে তারা ছাড়া আর কেউ সেই স্থান পূর্ণ করতে পারে না, তাদের ছাড়া সবাই অথৈ জলে পড়ে যায়। কিন্তু এটা কি সত্যি? কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি, নিজের মানুষ ব্যতীত সব শূন্যস্থানই একদিন না একদিন পূরণ হয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সময় দায়িত্ব নিয়ে সবকিছু ভুলিয়ে দেয়। কারও জন্য কোন কিছু আটকে থাকে না কারণ জীবন তো থেমে থাকে না। সে তো নিজের মত কালের নিয়মে বয়ে চলে।

এটা ঠিক যে কারও জন্য কোন কিছু আটকে থাকে না। কিন্তু নিজের প্রিয় মানুষের কিছু হলে সে তার কাছের মানুষের বাঁচার ইচ্ছেটাকেই সঙ্গে করে নিয়ে চলে যায়। সব কান্নার অর্থ যেমন দুঃখ নয় তেমনি সব হাসির অর্থও সুখ বা আনন্দ হয় না। আনন্দেও মন কেঁদে ওঠে আবার মনে হাজার কষ্ট নিয়েও কখনও কখনও হাসতে হয়। প্রিয়জনের শূণ্যতায় সেই শূন্যস্থান শূন্যই থেকে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবাই হয়তো সেই শূন্যস্থানগুলো সঙ্গে বাঁচতে শিখে যায় কিন্তু সেইগুলো পূরণ করা দুষ্কর হয় যেটা মাঝে মাঝেই ভীষণভাবে অনুভব করায়।

একটা চরম সত্য হল যে রাজার অভাবে রাজত্ব আটকে থাকে না। তার জায়গায় নতুন রাজা এসে শাসন করে। কিন্তু সব রাজা কি সমান হয়? কোন রাজা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া রাজত্বকে নিজের বুদ্ধি আর শক্তির বলে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়। নিজের রাজ্যকে সাম্রাজ্যে বিস্তার করে সম্রাট উপাধি লাভ করে যার জন্য তার বীরগাঁথা স্বর্ণাক্ষরে ইতিহাসের পাতায় খচিত হয়। আবার অন্য আরেক রাজার জন্যই সেই সাম্রাজ্যে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। সবাই তো রাজা, একজনের পরিবর্তে অন্যজন রাজত্ব করছে। তাহলে এই পার্থক্য কেন? সাম্রাজ্যের এই উত্থান পতন কেন?

শূন্যস্থান সময়ের সঙ্গে পূর্ণ হয়ে যায়, রাজত্ব চালানোর জন্য রাজাও এসে যায়, নির্দিষ্ট পদের জন্য পদাধিকারীও ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু কতটা সফলতার সঙ্গে সেই পদমর্যাদা সে রক্ষা করছে সেটা সময় বলে। শুরুতে নতুন হলেও সময়, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা তাকে খেলোয়াড় তৈরী করে দেয়। নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিচার বিবেচনাকে যে যত কাজে লাগায় তত সেই পদের যোগ্য অধিকারী হয়। কেউ কম কেউ বেশী কালের নিয়মে সর্বক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে তার জন্য নির্দিষ্ট করা পদে নিয়তি ঠিক হাজির করে দেয়। তাই অপরিহার্য এখানে কেউই নয়!!!


ঋতুপর্ণা বসাক

No comments:

Post a Comment

শ্রোতা ও বক্তা

  শ্রোতা ও বক্তা শব্দ দুটো নিজেরাই নামের মধ্যে নিজেদের চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করে দেয়। একজন বলে একজন শোনে। যে বলে সে বক্তা, আর যে শোনে সে ...

Popular Posts