Wednesday, December 22, 2021

দৃশ্য অভিন্ন কিন্তু দৃষ্টি বিভিন্ন!!!

 



মানুষ বড়োই বিচিত্র। একই অস্তিত্বের বিভিন্ন অনন্য রূপ। একই মানুষ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মানসিকতার পরিচয় দেয়। আবার কখনও বা একই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব একই মতামত ব্যক্ত করে। এই স্বতন্ত্র বৈশাদৃশ্যই মানুষকে একে অপরের থেকে আলাদা করে। প্রত্যেকের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ রয়েছে যা কোনো ঠিক বা ভুলের  দাঁড়িপাল্লায় মাপা যায় না। আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের থেকে দেখে শিখি, একে অপরের  সাথে আলোচনা করে শিখি; কিন্তু পরিশেষে নিজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য গড়ে তুলি।

প্রতিটা মানুষ নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে দেখে এবং  জীবন অতিবাহিত করে যেটা তার অভিজ্ঞতা, শিক্ষা থেকে গড়ে ওঠে। তাই একের দৃষ্টিকোণ অন্যের কাছে বিচিত্র মনে হতেই পারে, সেটা নিয়ে নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে; কিন্তু সেটা নিয়ে সমালোচনা করার আগে অবশ্যই ভাবা দরকার। সেই মানুষটির পারিপার্শ্বিক অবস্থা, প্রকৃতি, ধ্যান ধারণা সব বিচার করে তারপর তার মূল্যায়ন করা দরকার যে সত্যিই সেটা সমালোচনার যোগ্য কি না; কারণ একজন মানুষ কি অবস্থার সম্মুখীন হয়ে কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ সেই পরিস্থিতি, তার মানসিক অবস্থা এবং ব্যক্তিত্বের ওপর নির্ভর করে। তাই সমালোচনা যদি করতেই হয় তবে সেই মানুষটির জায়গায় নিজেকে বসিয়ে সব কিছুর যথাযথ বিচার বিশ্লেষণ করে তারপর করলে ভালো হয়। তাতে সমস্যা কম তৈরি হয়।

জীবন আমাদের সব থেকে বড় শিক্ষক। সে তার জ্ঞান, সময়, দর্শন সব দিয়ে আমাদের তৈরি করে দেয় যাতে আমরা নিজেদের জীবনকে ঠিকঠাক বুঝে নিয়ে বাঁচতে শিখি, তাকে উপভোগ করতে শিখি। শিক্ষক সব ছাত্রছাত্রীকে সমান শিক্ষা দেয়; কিন্তু এটা নির্ভর করে ছাত্রছাত্রীদের ওপর তারা কতটা সেই শিক্ষা গ্রহণ করছে এবং কিভাবে করছে। তাই জীবনের দেওয়া শিক্ষা বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন ভাবে গ্রহণ করছে যার ওপর ভিত্তি করে তার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ তৈরি হচ্ছে। তাই তাকে আমরা কোনো প্রতিযোগিতায় নামিয়ে বিজয়ী বা পরাজিতের তকমা দিতে পারি না।

জীবনের শিক্ষা বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পেয়েছে তা সেটা মানুষ, পশু, পাখি, গাছপালা যেই হোক। কারও কাছে সে খুব সুন্দর, কারও কাছে সে কঠিন বাস্তব। তাই একের দৃষ্টিভঙ্গি অপরের সাথে নাও মিলতে পারে আবার মিলতেও পারে। এটা কোনো সমস্যার বিষয় নয়। সমস্যা হল যখন একজন কোনো কিছু বিচার বিশ্লেষণ না করে আর একজনের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে এবং নিজের মতামত তার ওপর চাপিয়ে দেয়। সবাই সব পরিস্থিতি সমান ভাবে দেখে না এবং তার মোকাবিলাও আলাদা আলাদা ভাবে নিজের সাধ্য বুঝে, নিজের জীবনের দেওয়া শিক্ষার ওপর ভরসা করে তারপর করে। ব্যাপার টা হল ইংরেজিতে '6' আর '9' এর মতো। যেটা একজন এদিকে দাঁড়িয়ে '6' দেখছে, সেটাই অন্যজন ওদিকে দাঁড়িয়ে '9' দেখছে। তাই দুজনেই ঠিক কারণ দুজনেরই দৃষ্টি সঠিক কিন্তু দুজনের অবস্থান আলাদা। আর এটাই শাস্বত সত্য!!!

ঋতুপর্ণা বসাক


শ্রোতা ও বক্তা

  শ্রোতা ও বক্তা শব্দ দুটো নিজেরাই নামের মধ্যে নিজেদের চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করে দেয়। একজন বলে একজন শোনে। যে বলে সে বক্তা, আর যে শোনে সে ...

Popular Posts