ধন্যবাদ
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে থাকতে গেলে একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে হয়, একে অপরের বিপদে আপদে সাহায্য করতে হয়, সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু সমস্যা হলো কাজ মিটে গেলে একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন না করা যা আজকের যুগে অত্যন্ত প্রবল।
'ধন্যবাদ' বা 'Thank you' খুব ছোট্ট শব্দ, কিন্তু তার অর্থ এবং ফল দুটোই খুব বড়। কাউকে ধন্যবাদ দেওয়ার অর্থই হলো তার কাজ বা সাহায্য বা সমর্থন কে উপলব্ধি করে তাকে স্বীকৃতি দেওয়া। এর ফলে সেই ব্যক্তির সমস্ত পরিশ্রম সার্থক হয় এবং সে তার সেই কাজের মধ্যে জীবনের আনন্দ খুঁজে পায়।
যখন আমাদের দরকার হয় তখন যার থেকে সাহায্য পাবো তাকে ব্যস্ত করে ছাড়ি। কিন্তু যেই কাজটা হয়ে গেলো আর তাকে মনে রাখি না, তার কাজের যথার্থ মূল্যায়ণ করার চেষ্টা করি না, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সামান্য ধন্যবাদ টুকুও দিতে ভুলে যাই। জীবনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষজন আমাদের পাশে থাকে, সাহস যোগায়, সাহায্য করে; কিন্তু সবসময় আমরা বোধহয় তাদের যথার্থ সম্মান জানাতে পারি না। স্বয়ং ঈশ্বরকেও আমরা বাদ দিই না। তাঁর কাছে আমরা সবসময় চেয়ে যাচ্ছি, কিন্তু যেই সেটা পেয়ে গেলাম আর তাঁকে মনে রাখি না। তাঁকেও যে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত সেটাই আমাদের মনে হয় না।
ধন্যবাদ সবসময় কথায় দেওয়া যায় না। বিভিন্ন মাধ্যমেও ধন্যবাদ প্রকাশ করা যায়, তা সে অর্থ হোক বা উপহার বা কোন কিছুর অঙ্গীকার। ধন্যবাদ শব্দের মাধ্যমে আমরা একে অপরের পরিশ্রমকে সম্মান জানাই যা আমাদের জীবনের পথে এগিয়ে যেতে উৎসাহ যোগায়। ধন্যবাদ শব্দের মাধ্যমে আমরা একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি যা পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রাখতে সাহায্য করে।
কাউকে বলা একটা ছোট্ট 'ধন্যবাদ' বা 'Thank you' হলো সেই জাদু চাবিকাঠি যা অনেক মনের বন্ধ দরজা খুলে সেখানে প্রবেশের অধিকার দেয়। ধন্যবাদ একজন মানুষের পরম কৃতজ্ঞতা, নম্রতা এবং উপলব্ধিকে প্রকাশ করে। জীবনে শুভ অশুভ যাই আসুক না কেন তাকে গ্রহণ করে স্বীকৃতি দেওয়াই হলো জীবনের সমস্ত সম্পদের প্রধান ভিত্তি। কথায় বলে,
When life is sweet, say thank you and celebrate.
When life is bitter, say thank you and grow.
ঋতুপর্ণা বসাক