Monday, October 31, 2022

উৎসব



'উৎসব' নামের মধ্যেই এক খুশীর ঢেউ খেলে যায় মনের মধ্যে। উৎসব মানে আনন্দ, ভালোলাগা, সমৃদ্ধি। উৎসব মানে মনের মিল, প্রিয়জনের দেখা পাওয়া, সব কষ্ট ভুলে আনন্দে মেতে ওঠা। সবাইকে এক হওয়ার, কাছাকাছি আনার, দূরত্ব মেটাবার মাধ্যম হলো উৎসব। উৎসবে সবাই অশুভ সব মিটিয়ে শুভ কে আহ্বান করে নতুন পথ চলার অঙ্গীকার করে। 

উৎসব মানেই বৈচিত্র্য যেখানে বিভিন্ন রং, ধর্ম, জাতি, দেশ সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়, নিজস্ব বৈশিষ্ট্যতা হারিয়ে এক নতুন সৃষ্টিতে সবাই যোগদান করে। প্রত্যেকে উৎসবের তার নিজস্ব মাহাত্ব আছে যা অন্য আর এক উৎসব থেকে তাকে আলাদা করে। প্রতিটি উৎসবের নিজস্ব ইতিহাস, আচার আচরণ, বৈশিষ্ট্য আছে যা একটি দেশের বা সমাজের সংস্কৃতির ধারক হিসাবে কাজ করে।

উৎসব মানেই স্মৃতি। বছর বছর একই উৎসব বিভিন্ন স্মৃতি তৈরী করে যা আগামী দিনে বেঁচে থাকার ভালো থাকার রসদ জোগায়। আবার কখনও বা অতীতের কোন বেদনাদায়ক ঘটনা দুঃখের স্মৃতি বহন করে আনে যা কষ্ট দেয়, পুরোনোকে মনে করায়। উৎসব মানেই ভালো খারাপ মিলিয়ে এক নতুন মেলবন্ধন যেখানে সবাই পুরোনোকে সঙ্গী করে নতুন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়।

উৎসব একটা আবেগ যা সবার মধ্যে বিদ্যমান; কারণ এই উৎসবেই সবাই সারা বছরের ক্লান্তি দূর করে একে অপরের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিযোগিতার চাপে হারিয়ে যাওয়া মানুষরা উৎসবের মধ্যে দিয়ে তৃপ্তির শ্বাস নেয়, নিজের অনুভূতিগুলো অনুভব করে, নিজের সাথে এবং সবার সঙ্গে সময় কাটাতে পারে। তাই হয়তো সারা বছর সবাই তাদের এই প্ৰিয় উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে। উৎসব হলো সব ধার্মিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মনোভাবের মিলনক্ষেত্র


ঋতুপর্ণা বসাক

Tuesday, October 18, 2022

সময়, এইসময়, ঐসময়, সুসময়, দুঃসময় - সবসময়

সময় সৃষ্টির বড়ই অদ্ভুত এক আবিষ্কার যা আমাদের সবকিছুর সাথে পরিচয় করায়, মানিয়ে নিতে শেখায়। সময় প্রতি ক্ষণে আমাদের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে শেখায়। আজ যা আছে কাল তা নাও থাকতে পারে। আজকের পরিবেশ কাল পরিবর্তন হয়ে যেতেও পারে। সময়ের হাত ধরেই সবাই শৈশব থেকে কৈশোর, কৈশোর থেকে যৌবন, যৌবন থেকে বার্ধক্যে উপনীত হয় এবং পরিশেষে অন্তিম যাত্রার পথিক হয় । সবই সময়ের ব্যাপার।

ভালো সময় সবাই চায় কারণ তখন সব ভালো হয় - সমৃদ্ধি, উন্নতি, প্রশংসা, প্রিয়জন সব পাশে থাকে। আর খারাপ সময় মানেই এগুলির অনুপস্থিতি। কিন্তু খারাপ সময়ের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হল সে প্রকৃত বন্ধু চিনতে শেখায়। ভালো সময়ে তোমার কাছে সব আছে, তোমার থেকে সবাই নেবে, তাই তোমার পাশে থাকে। কিন্তু খারাপ সময়ে তোমার কাছে কিছু নেই, তোমাকে দেবে বা সাহায্য করবে। আর সেটা কতজন করে সেটাই খারাপ সময় চিনতে শেখায়।

সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না। সে তার গতিতেই চলে। প্রতিটি সময়ের নিজস্ব দাম আছে। সঠিক মুহুর্তের জন্য অপেক্ষা না করে প্রতিটি মুহুর্তকে কাজে লাগানোই সঠিক সিদ্ধান্ত। সময়কে কেউ ধরে রাখতে পারে না কিন্তু সেটাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে তার গুরুত্ব বাড়াতে পারে। কারণ একবার যে সময় চলে যায় তাকে হাজার চেষ্টা করেও ফিরে পাওয়া যায় না। তাই যে সময় বর্তমানে উপস্থিত তাকে ভালো ভাবে উপভোগ করতে হয়, নয়তো পরে আফসোশ করতে হয়।

এটা ঠিক সময় বহমান, তার ওপর কারও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু এটাও ঠিক যে সেই সময়কে কিভাবে কাজে লাগানো হবে সেটা নির্ভর করে মানুষের ওপর। প্রতিটা মানুষ সবচেয়ে বেশি যেটা চায় সেটা হল সময় কিন্তু সবচেয়ে বেশি সেটাই সে নষ্ট করে। যে মানুষ যতটা ভালো ভাবে সময়কে কাজে লাগাতে পারবে তার কাছে সময় ততটাই সুহৃদ হয়ে উঠবে। আর এই ব্যবহৃত সময়ই ভবিষ্যতে বিভিন্ন সুখ দুঃখের স্মৃতি বহন করে। ভালো ভাবে কাজে লাগালে তা সুখকর স্মৃতি আনবে, আর ভুল ভাবে কাজে লাগালে দুঃখ হবে এবং নতুন শিক্ষা পাবে ।

সময়ের বিস্তার সর্বত্র। স্বয়ং ঈশ্বরও সময়কে বাদ দিয়ে চলতে পারেন না। সেখানে প্রতি মুহুর্তে জগতে সময়ের প্রভাব অসীম। তা সে এক সেকেন্ড, এক মিনিট, এক দিন, এক মাস, এক বছর - যাই হোক না কেন। প্রত্যেকের নিজস্ব গুরুত্ব আছে। সময় খুব সুন্দরভাবে জীবনে যেটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ সেটা দেখিয়ে দেয়। সম্পর্কের সমীকরণগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়। প্ৰিয় থেকে অপ্রিয়, প্রিয়জন থেকে প্রয়োজন, গুরুত্ব থেকে বিরক্ত সবই সম্ভব - পার্থক্য টা শুধু সময়ের।


ঋতুপর্ণা বসাক

শ্রোতা ও বক্তা

  শ্রোতা ও বক্তা শব্দ দুটো নিজেরাই নামের মধ্যে নিজেদের চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করে দেয়। একজন বলে একজন শোনে। যে বলে সে বক্তা, আর যে শোনে সে ...

Popular Posts