দেওয়া নেওয়া শব্দ দুটোর মধ্যে একটা সূক্ষ আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে যা আজকাল এক স্থুল ব্যবসায়িক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। কেউ কাউকে কিছু দিয়েই তার পরিবর্তে কিছু নেওয়ার কামনা করে, যেন এটা তার প্রাপ্য তার অধিকার। কিছু না নিয়ে শুধু দেওয়া যেন একপ্রকার বিলাসিতা, কল্পনা মাত্র। দেওয়া নেওয়া বর্তমান সমাজের এক কঠিন বাস্তব চিত্র।
কখনও কখনও প্রয়োজনে একজন আরেকজনের কাছ থেকে সাহায্য নেয় সেটা অর্থই হোক বা অন্য কিছু। কিন্তু বর্তমানে কাউকে কিছু দেওয়া মানেই তার ওপর একটা অঘোষিত, অলিখিত অধিকার দেখানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়ে যায়। যদি কখনও সেই সাহায্য সেই ব্যক্তি পরিশোধ করেও দেয় তাহলেও কোন এক সময় সে সাহায্য পেয়েছে এই মানসিকতায় তার ওপর অধিকার খাটানোর একটা প্রচেষ্টা থেকেই যায়।
একটা সম্পর্ক দেওয়া নেওয়ার মধ্যে একটা ভারসাম্য। একদিকে শুধুই নেওয়া আর কোন দেওয়া নেই তাহলে সেই সম্পর্ক আর বজায় থাকে না। উভয় পক্ষের দেওয়া নেওয়ার মিলিত প্রচেষ্টা একটা সুষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে, সুন্দর ভাবে বজায় রাখে। সমপরিমাণ দেওয়া নেওয়া প্রয়োজনীয় নয় কিন্তু মানসিকতা আবশ্যক । শুধুই নেওয়া আর কোন দেওয়া নয় এটা একান্ত ভাবেই কাম্য নয়।
জীবন পুরোটাই এই দেওয়া নেওয়া সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে তৈরী কারণ সবাই পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। যদি কেউ কোন কিছু দিতে অনাগ্রহী থাকে তবে তার কোন কিছু নিতেও আগ্রহী হওয়া উচিৎ নয়। আবার কেউ যদি শুধুই দিয়ে যায় সেই ক্ষেত্রেও দাতার সীমাজ্ঞান থাকা আবশ্যক কারণ অনেকসময় গ্রহীতার সেটা থাকে না, সে শুধু নিতে ব্যস্ত থাকে।
অনেক ক্ষেত্রে দেওয়ার মধ্যে একটা পাওয়ার আশা থেকে যায় যেটা তার দেওয়ার মানসিকতাকে কলুষিত করে। তাই কাউকে স্বেচ্ছায় কিছু দিলে এটা মনে করে দেওয়া উচিৎ সেটা আর কখনও ফেরত পাবে না। দরকার হলে অল্প দেওয়া ভালো বা সেরকম হলে না দেওয়া। কিন্তু দিলে পাওয়ার আশা কোনও ভাবেই উচিৎ নয় আর নিলে সেটা সবসময় মনে রাখা উচিৎ। তাহলেই সম্পর্ক ভালো থাকবে। তাই, Brian Tracy র উক্তিতে...
Always give without remembering
& Always receive without forgetting.
ঋতুপর্ণা বসাক