Friday, June 27, 2025

শ্রোতা ও বক্তা

 


শ্রোতা ও বক্তা শব্দ দুটো নিজেরাই নামের মধ্যে নিজেদের চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করে দেয়। একজন বলে একজন শোনে। যে বলে সে বক্তা, আর যে শোনে সে শ্রোতা। বক্তার সর্বদা একজন শ্রোতার প্রয়োজন হয় যার কাছে সে তার মনের সব কথা খুলে বলে। মনের যত রাগ, দুঃখ, অভিমান, ভালো মন্দ সব অভিজ্ঞতা উজাড় করে শ্রোতাকে বলে। আর শ্রোতা ধৈর্য্য ধরে মনোযোগ সহকারে তা শোনে। এটাই প্রকৃত দৃশ্য 'শ্রোতা' ও 'বক্তা' শব্দের ধ্বনিতে মনের মধ্যে ভেসে ওঠে।

অনেক সময় মানুষ এটা ভুলে যায় শ্রোতারও একজন শ্রোতার প্রয়োজন হয়। তারও বক্তা হওয়ার দরকার আছে। সে শুধু সবটা শুনে যাবে আর নিজে কিছু বলবে না এটা হয় না, হতে পারে না। তারও বক্তা হওয়ার ইচ্ছে হয়। নিজের জমানো সব কথা, সুখ দুঃখের গাঁথা অন্যকে সেও প্রকাশ করতে চায়। কোন কিছু প্রকাশ না করে শুধু নিজের মধ্যে জমিয়ে রাখলে সে তো অসুস্থ হয়ে পড়বে। নিজের অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে ভাগ করে না নিলে অন্যরা অনেক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত থেকে যাবে। তাই নিজের এবং সবার সার্বিক উন্নতির জন্য শ্রোতারও বক্তা হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

শ্রোতার যেমন বক্তা হওয়া দরকার ঠিক তেমনি বক্তারও শ্রোতা হওয়া আবশ্যক। সে শুধু বলে যাবে, কিছু শুনবে না তা তো হতে পারে না। তারও অন্যের কথা শোনা দরকার। অন্যের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। বক্তা যা বলছে শুধু সেগুলোই দরকারী, বাকিদের কথা অদরকারী এই মনোভাব পোষণ করলে জীবনে এগোনোর বদলে আরও পিছিয়ে যাবে। সবার কথাই শোনা দরকার আর তার মধ্য থেকে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনের পথে এগিয়ে চলতে হয়।

জীবনে শ্রোতা বক্তা উভয়েরই সমান ভূমিকা রয়েছে। ভালো বক্তা হতে গেলে সবার আগে একজন ভালো শ্রোতা হতে হয়। সবার অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান আহোরণ করে নিজের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হয় আর তারপর সেটা সবার মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়। তবেই একজন ভালো বক্তা হওয়া যায়। শুধু নিজের কথা বললে কেউ শুনবে না, একঘেয়ে লাগবে। কিন্তু যখন সবার কথা বলা হয় তখনই সবাই শোনে, মানে এবং শিক্ষা নেয়।


ঋতুপর্ণা বসাক

Thursday, May 22, 2025

শূন্য নাকি পূর্ণ

 

সবাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের খুব অপরিহার্য মনে করে। তারা ভাবে তারা ছাড়া আর কেউ সেই স্থান পূর্ণ করতে পারে না, তাদের ছাড়া সবাই অথৈ জলে পড়ে যায়। কিন্তু এটা কি সত্যি? কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি, নিজের মানুষ ব্যতীত সব শূন্যস্থানই একদিন না একদিন পূরণ হয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সময় দায়িত্ব নিয়ে সবকিছু ভুলিয়ে দেয়। কারও জন্য কোন কিছু আটকে থাকে না কারণ জীবন তো থেমে থাকে না। সে তো নিজের মত কালের নিয়মে বয়ে চলে।

এটা ঠিক যে কারও জন্য কোন কিছু আটকে থাকে না। কিন্তু নিজের প্রিয় মানুষের কিছু হলে সে তার কাছের মানুষের বাঁচার ইচ্ছেটাকেই সঙ্গে করে নিয়ে চলে যায়। সব কান্নার অর্থ যেমন দুঃখ নয় তেমনি সব হাসির অর্থও সুখ বা আনন্দ হয় না। আনন্দেও মন কেঁদে ওঠে আবার মনে হাজার কষ্ট নিয়েও কখনও কখনও হাসতে হয়। প্রিয়জনের শূণ্যতায় সেই শূন্যস্থান শূন্যই থেকে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবাই হয়তো সেই শূন্যস্থানগুলো সঙ্গে বাঁচতে শিখে যায় কিন্তু সেইগুলো পূরণ করা দুষ্কর হয় যেটা মাঝে মাঝেই ভীষণভাবে অনুভব করায়।

একটা চরম সত্য হল যে রাজার অভাবে রাজত্ব আটকে থাকে না। তার জায়গায় নতুন রাজা এসে শাসন করে। কিন্তু সব রাজা কি সমান হয়? কোন রাজা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া রাজত্বকে নিজের বুদ্ধি আর শক্তির বলে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়। নিজের রাজ্যকে সাম্রাজ্যে বিস্তার করে সম্রাট উপাধি লাভ করে যার জন্য তার বীরগাঁথা স্বর্ণাক্ষরে ইতিহাসের পাতায় খচিত হয়। আবার অন্য আরেক রাজার জন্যই সেই সাম্রাজ্যে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। সবাই তো রাজা, একজনের পরিবর্তে অন্যজন রাজত্ব করছে। তাহলে এই পার্থক্য কেন? সাম্রাজ্যের এই উত্থান পতন কেন?

শূন্যস্থান সময়ের সঙ্গে পূর্ণ হয়ে যায়, রাজত্ব চালানোর জন্য রাজাও এসে যায়, নির্দিষ্ট পদের জন্য পদাধিকারীও ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু কতটা সফলতার সঙ্গে সেই পদমর্যাদা সে রক্ষা করছে সেটা সময় বলে। শুরুতে নতুন হলেও সময়, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা তাকে খেলোয়াড় তৈরী করে দেয়। নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিচার বিবেচনাকে যে যত কাজে লাগায় তত সেই পদের যোগ্য অধিকারী হয়। কেউ কম কেউ বেশী কালের নিয়মে সর্বক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে তার জন্য নির্দিষ্ট করা পদে নিয়তি ঠিক হাজির করে দেয়। তাই অপরিহার্য এখানে কেউই নয়!!!


ঋতুপর্ণা বসাক

Thursday, April 10, 2025

লড়াই

 


জীবন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা কোন না কোন লড়াই করে চলেছি।প্রতিটা জীব প্রতিটা মুহূর্তে কিছু না কিছুর জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। কখনও বাঁচার জন্য, কখনও খাবারের জন্য, কখনও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য, কখনও অধিকারের জন্য, কখনও সম্মানের জন্য, আবার কখনও বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কেউ না কেউ কখনও একক ভাবে তো কখনও সমবেত ভাবে সর্বক্ষণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এই লড়াইগুলোই আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের সাফল্যের চাবিকাঠি, কারণ এই লড়াইগুলোই আমাদের এক একটা শিক্ষা দেয়। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত ভাবে আসা বাঁধাগুলো আমাদের এক একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করায়। তখন আমাদের সামনে দুটো পথ খোলা থাকে; হয় আমরা শোকে দুঃখে বিষণ্ণ হয়ে, মুষড়ে পড়ে হার মেনে নিয়ে নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিই নতুবা সেই দুঃখটাকেই শক্তিতে পরিণত করে নিজেদের পুনরায় আবিষ্কার করে আত্ম-উন্নয়নের এক উজ্জ্বল পথে নিজেদের চালনা করি। তাই নিজেদের জন্য ধ্বংস না নির্মাণ কোনটা চাই সেই সিদ্ধান্তটা নিজেদেরই নিতে হয়।

প্রত্যেকেই কোন না কোন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলে । আর তার জন্য দৃঢ় আকাঙ্খা দিয়ে বোনা সেই স্বপ্নের সঙ্গে আপোসহীন থাকতে হয়। প্রতি মুহূর্তে প্রত্যেকেই নিজের ভাগের বরাদ্দ লড়াইটা লড়ে চলেছে। অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে অনেক লড়াই করে এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়; গন্তব্যের উদ্দেশ্যে এতো সবে শুরু, আরও অনেকটা পথ চলতে হবে। অনেকসময় আমাদের শক্তিটাকেই আমাদের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে আমাদের দুর্বল করে দেবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিগুলোতে দুর্বল হলে চলে না, তাহলে সব শেষ হয়ে যায়। নিজের আত্মসম্মান বোধটাকে অক্ষুন্ন রেখে নিজের লড়াইয়ের ওপর বিশ্বাস রেখে লড়ে যেতে হয়। আর এই লড়াইয়ের পথে চলতে গেলে নিজেকে দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে নিজের লক্ষ্যে অটল থেকে প্রতিটা পদক্ষেপই সবল ভাবে ফেলতে হয় যার শুরুটা প্রথম থেকেই প্রবল ভাবে করতে হয়

জীবনে চলতে গেলে শঙ্কা, ভয় এসব আসবেই। সব ভয় কাটিয়ে ফেলতে হয়। এই ভয় কাটানোটাও একটা লড়াই। আর এই লড়াইটা যখন নিজের সঙ্গে হয় তখন তাতে হারা যায় না। এই লড়াইটা যদি নিজের কাছের মানুষের সঙ্গে হয় তাতে হেরে গেলেও ক্ষতি নেই। জীবনের সব চাইতে বড় লড়াই কোনটা? নিজেকে নিজে ভালো রাখতে পারাটা। অনেকেই অবলম্বন হিসাবে পাশে থাকলেও দিনের শেষে লড়াইটা কিন্তু আমাদেরই লড়তে হয় কারণ সেটা আমাদের জন্যই বরাদ্দ। আর এই লড়াইটা করতে করতে অনেক বাস্তবতা, অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আমাদের অনেক জ্ঞান ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায় যা আত্মউন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়কের ভূমিকা পালন করে। প্রত্যেকে নিজের ভাগের লড়াইটা নিজেরাই লড়ে, তার হয়ে অন্য কেউ নয়। তাই নিজেকে নিজেই ভালো রাখতে জানতে হয় কারণ শেষ পর্যন্ত নিজের জন্য শুধু নিজেই থাকে, এটাই নির্মম বাস্তবতা

নিজেকে ভালো রাখতে নিজের চিন্তা ভাবনার দাসত্ব না মেনে তার ওপর রাজত্ব করা শিখতে হয়। নিজের সঙ্গে নিজেকে সময় কাটাতে হয়, তাকে চেনার চেষ্টা করতে হয়। নিজের প্রচ্ছন্ন প্রতিভাগুলোকে খুঁজে বার করে কাজে লাগাতে হয়। নিজের অপরাজেয় সত্ত্বার সঙ্গে পরিচয় হওয়াটা অত্যন্ত দরকার। নিজের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা করে নিজেকে আরও উন্নত করার লড়াইটা গভীরভাবে কাম্য। জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেকেই নিজের প্রেরণা হিসাবে আবিষ্কার করাটাও বিশেষভাবে প্রয়োজন। এটাই পরম প্রাপ্তি হিসাবে জীবনের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে খচিত থাকে।


ঋতুপর্ণা বসাক

Sunday, March 2, 2025

অনুভূতি

 


অনুভূতি আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে স্বমহিমায় বিরাজমান কিন্তু তার প্রকাশিত হওয়া আমাদের দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল যা ব্যক্তিবিশেষে পরিবর্তিত হয়। এটা যদি একটা শিল্প হয় তবে সবার শৈল্পিক সত্ত্বাটা অবশ্যই আলাদা আলাদা হয়, কারও কম কারও বেশী। একেকজন একেকভাবে অনুভূতির প্রকাশ করে, কেউ গল্পে কেউ কথায়, কেউ মুখের হাসিতে কেউ চোখের জলে, কেউ শব্দে তো কেউ নিঃশব্দে। অনুভূতি কখনও মরে না, সুপ্ত হয়ে চাপা পড়ে থাকে। তবে প্রয়োজনে আবার ডানাও মেলে ধরে

সবকিছুর সঙ্গেই তা সে ব্যক্তি হোক বা বস্তু আমাদের কিছু না কিছু অনুভূতি জড়িয়ে থাকে। কোনকিছুর প্রতি বা কারও ওপর কোন এক অজানা টান থেকে এক সুপ্ত অনুভূতির সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে সেই অনুভূতির প্রকৃতির উপলব্ধি হয় যে সেটা দুঃখের না আনন্দের। তারপর সেই অনুভূতির গভীরতার উপলব্ধি হয় যে সেই অনুভূতির সঙ্গে আমরা কতটা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। কখনও কখনও হয়তো সময় খুব স্বল্প হয় কিন্তু অনুভূতির গভীরতা সেই ক্ষণকালকে অনন্তকালে পরিণত করে। বলাবাহুল্য, সময় দিয়ে কখনই অনুভূতির গভীরতা পরিমাপ করা যায় না।

জীবনে ভালো খারাপ সবরকম অনুভূতিরই অভিজ্ঞতা থাকা ভালো কারণ কোন অনুভূতি না থাকলে বা এক রকমের অনুভূতি থাকলে জীবনটা বড্ড একঘেয়ে হয়ে যেত, রোমাঞ্চকর বা রহস্যময় লাগতো না। কখনও কখনও কোন বিশেষ মুহূর্তে সৃষ্ট কোন বিশেষ অনুভূতির উপলব্ধিগুলোকে যদি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা যেত তবে অনুভূতির এক আশ্চর্য প্রদর্শনী হতে পারতো যা অনুভূতির উপলব্ধিতে অনেক সাহায্য করতো।

অনুভূতি গভীরতার উপলব্ধির পরেই চলে আসে তার প্রকাশ। অনেকসময় পরিস্থিতি এমন হয় যে অনুভূতির উপলব্ধি হওয়া সত্ত্বেও তাকে প্রকাশ করা জটিল হয়ে দাঁড়ায়। পরিবেশ, পরিস্থিতি, ব্যক্তি হয়তো কোন না কোন ভাবে এর কারণ হয়ে দাঁড়ায় যাকে কাটানো দুষ্কর হয়ে যায়। আবার অনেকসময় অনুভূতির প্রকাশ জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসে যা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। যেখানে কিছু না বলেও অনুভূতির প্রকাশ পাওয়া যায় সেখানে আর কোন শব্দের প্রয়োজন পড়ে না। সব সময় দীর্ঘ বাক্য রচনা করে অনুভূতির প্রকাশ করতে হবে এমন কোন কথা নেই। দীর্ঘ বক্তব্য ছাড়াও এক শব্দে নিজের অনুভূতি বোঝানো যায় যদি সেই শব্দে আবেগ মিশ্রিত থাকে আর সামনের জন তা অনুধাবন করতে সমর্থ হয়। 

অনেকসময় বলার মতো হয়তো অনেক কথাই থাকে, প্রকাশ করার মতো অনেক অনুভূতিই থেকে যায়, রয়ে যায় অনেক স্বীকারোক্তিও; কিন্তু নীরবতা আপন ভাষায় সবটা ব্যক্ত করে দেয়। কিছু কিছু সময় কিছু অনুভূতি হয় যাদের গভীরতা বর্ণনা করার জন্য প্রচলিত সব শব্দই অনুপযুক্ত হয়। আবার কিছু সময় হয়তো সব অনুভূতি আলাদা করে কথায় প্রকাশ করার দরকার পড়ে না। কিছু অব্যক্ত কথা নিবিড় ভাবে কিছু গভীর অনুভূতিকে ব্যক্ত করার ক্ষমতা দেখিয়ে দেয়। কখনও কখনও হাজারো শব্দের সমষ্টি নয়, অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য ছোট্ট তবে অসামান্য একটা পদক্ষেপই যথেষ্ট।


ঋতুপর্ণা বসাক

Saturday, January 11, 2025

জীবন হাস্যরস

 


জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরী হয় যা আমাদের কাছে অপ্রীতিকর এবং অনাকাঙ্খিত। কোন ভাবে কোন অবস্থাতেই হয়তো এরজন্য আমরা তৈরী ছিলাম না। কিন্তু এদেরকে এড়িয়ে বা বাদ দিয়ে আমরা এগোতেও পারবো না। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এরা যেমন শরীরের কোন অংশকে বাদ দিয়ে কিছু হয় না। তাই নিরুপায় হয়ে এই পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হয়।

ঘটনাবহুল এই পরিস্থিতিগুলো আমাদের শারীরিক, মানসিক, জৈবিক সবাই ক্ষেত্রেই এক অন্যরকম সংবেদন শক্তির সঞ্চার ঘটায়। তাই এই পরিস্থিতির সবকিছু গম্ভীর ভাবে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু ব্যাপার খানিকটা হালকা ভাবে নেওয়ার অভ্যেসটা ওই পরিস্থিতির মধ্যে টিকে থাকাটাকে কিছুটা সহজতর করে দেয়। তবে বেপরোয়া হওয়াটাও ঠিক নয়।

সব ব্যাপারে গুরুগম্ভীর হয়ে থাকলে পরিস্থিতিটা আরও বেশী প্রতিকূল হয়ে ওঠে। তাতে আশেপাশের সম্পর্কগুলোও প্রভাবিত হয় যার প্রভাব সবার জীবনেই পড়ে। অনেক জ্ঞান, অভিজ্ঞতার সঙ্গে হাস্যরস মিশিয়ে পরিস্থিতিগুলোর মোকাবিলা করার অভ্যেসটা আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মউন্নয়নের রাস্তা করে দেয় যা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে অনেক বড় সাহায্য করে।

ওই ঘটনাবহুল পরিস্থিতিগুলো একেবারে দমকা হাওয়ার সঙ্গে অযাচিত ভাবে মিশে আসা কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, আমোনিয়া এই সব বিষাক্ত গ্যাসের মতো যা আমাদের দমবন্ধ অবস্থায় ফেলে দেয়। সেখানে হাস্যরস মিশিয়ে নেওয়ার অভ্যাসটা শুষ্ক ভূমিতে এক পশলা বৃষ্টির মতো আমাদের জীবনে এক পশলা বিশুদ্ধ অক্সিজেনের ভূমিকা পালন করে। আর এই অভ্যাসটা সেই ভয়ানক পরিস্থিতির ভয়াবহতা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দেওয়ার প্রয়াস করে


ঋতুপর্ণা বসাক

শ্রোতা ও বক্তা

  শ্রোতা ও বক্তা শব্দ দুটো নিজেরাই নামের মধ্যে নিজেদের চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করে দেয়। একজন বলে একজন শোনে। যে বলে সে বক্তা, আর যে শোনে সে ...

Popular Posts